• সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জৈষ্ঠ ১৪২৯

সারা দেশ

অনাস্থায় ক্ষতিগ্রস্থ অতিদরিদ্ররা, ফেরত যাচ্ছে মজুরির প্রায় ২৯ লক্ষ টাকা

  • ''
  • প্রকাশিত ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩

কিশোরগঞ্জ(নীলফামারী)প্রতিনিধি:

অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির (ইজিপিপি) ২৮ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ফেরত যাওয়াসহ ননওয়েজ কস্ট, টিআর, কাবিখা, উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড বন্ধ হয়ে রয়েছে। ইউপি সদস্য কর্তৃক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনায় অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির অর্থ ফেরত যাওয়াসহ ননওয়েজ কস্ট, টিআর, কাবিখা, উন্নয়নমূলক কাজের অর্থ ফেরত যাওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। এতে ইউনিয়নটির ১৭৮ জন দরিদ্র মানুষ অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির উপকার হতে বঞ্চিত হচ্ছে। ঘটনাটি নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার নিতাই ইউনিয়নে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্র জানায়- চলতি অর্থ বছরে অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির (ইজিপিপি) ৪০ দিনের কাজে নিতাই ইউনিয়নে ৫ টি প্রকল্প অনুমোদন হয়। এতে উপকারভোগীর সংখ্যা ১ শ’ ৭৮ জন। প্রত্যেক উপকারভোগী দিন প্রতি ৪০০ টাকা করে পায়। উপকারভোগীর মজুরি, সরদার মজুরিসহ বরাদ্দকৃত অর্থ ২৮ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। এছাড়া রয়েছে ননওয়েজ কস্টের অর্থ। অন্যদিকে টিআর, কাবিখার বরাদ্দও রয়েছে। নিতাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা হওয়ায় অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির (ইজিপিপি) ৪০ দিনের কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি বলে অফিস সূত্র জানায়। এছাড়া ননওয়েজ কস্ট, টিআর, কাবিখার অর্থ ফেরত যাওয়ার আশংকাও রয়েছে সূত্র জানায়।

কিশোরগঞ্জ উপজেলার ৩নং নিতাই ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত সদস্যরা বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ এনে ওই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোত্তাকিনুর রহমানের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনে উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেছে। ফলে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা হওয়ায় অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির (ইজিপিপি) ৪০ দিনের কাজ বন্ধসহ ননওয়েজকস্ট, টিআর, কাবিখা, উন্নয়নমূলক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ফলে অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির (ইজিপিপি) ৪০ দিনের কাজ হতে বঞ্চিত হচ্ছে অতিদরিদ্ররা। ফেরত যাচ্ছে অতিদরিদ্র ১৭৮ জন উপকারভোগী মজুরির ২৮ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা।

ইউপি সদস্য মনোয়ারুল ইসলাম জানান- আমরা সকল ইউপি সদস্য ও মহিলা সদস্যরা চেয়ারম্যানের বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতি তুলে ধরে অনাস্থা এনেছি। তবে অনাস্থা আনার আগেই সভার মাধ্যমে অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির (ইজিপিপি) ৪০ দিনের কাজের প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। কেন অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির (ইজিপিপি) ৪০ দিনের কাজ হল না বা হচ্ছে না তা আমাদের জানা নেই। চেয়ারম্যান সাহেব চাইলে কাজ চালু করতে পারতো। ফলে এ ইউনিয়নের গরিব মানুষরা ৪০ দিনের কাজের অর্থ পেত।

নিতাই ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান মোত্তাকিনুর রহমান জানান- আমাকে হেনস্থা, আমার ভাবমূর্তি-ইমেজ নষ্ট করার জন্য আমার বিরুদ্ধে তারা মিথ্যা অভিযোগ এনে অনাস্থার আবেদন করেছে। আমি ৪০ দিনের মাটি কাটার কাজ চালু করার জন্য দফায় দফায় তাদের ডেকেছিলাম। তারা অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির (ইজিপিপি) ৪০ দিনের কাজ শুরু করার বিষয়ে কোন সাড়া দেয়নি। ফলে প্রকল্পের কাজ চালু করা সম্ভব হয়নি। এতে আমার ইউনিয়নের অতিদরিদ্ররা ৪০ দিনের কর্মসূচির উপকার হতে বঞ্চিত হল।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ রাশেদুল ইসলাম জানান- নিতাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ইউপি সদস্যরা অনাস্থা আনায় ওই ইউনিয়নে অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির (ইজিপিপি) ৪০ দিনের কাজ বন্ধ রয়েছে। ইতোমধ্যে ৩০ দিনের কাজের অর্থ বাতিল হয়েছে। বাকী ১০ দিনের টাকাও ফেরত যাওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। ফলে এ ইউনিয়নের বরাদ্ধকৃত ২৮ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ফেরত যাবে। এছাড়াও ননওয়েজ কস্ট, টিআর, কাবিখা প্রকল্পের অর্থও ফেরত যাওয়ার আশংকা রয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার এম এম আশিক রেজার সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান- আমি এ উপজেলায় সদ্য যোগদান করেছি। অনাস্থার বিষয়টি শুনেছি। যা তদন্ত চলমান। অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির (ইজিপিপি) ৪০ দিনের কাজের টাকা ফেরত যাবে কিনা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বলতে পারবে। আমি বিষয়টি দেখছি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads